সমুদ্র বলতো, লক্ষ্মীছাড়ার জীবনেও কি সুখ সয়! আমার তো সয় না। আমি নিঃসঙ্গ পথিক, আরে পথ তো একলাই চলতে হয় পাগল! এসেছ যখন; কিংবা যখন চলে যাবে- কেউ কি সাথে থাকবে! তবুও মাঝের এই পথে কেনই যেন সঙ্গি খোঁজা! সবাই খোঁজে, সৃষ্টির আদি থেকেই। গুহাবাসী সেই মানবীরও শুনেছি প্রেম ছিল!
কেউ কেউ পাশে পায়, আমিও পেয়েছিলাম। তার ভাবনায় আমার অনুপ্রবেশ নেই, সেখানে আমার স্থান আছে কিনা সেটাও জানা হয়নি কখনো। নিজের সাথে অনেক বেশী মিলে যায় তার ভাবনাগুলি। তাই হয়তো তাকে খুব আপন মনে হত। সমুদ্র নামের তাকে খুব অনুভব করতাম। প্রথম পরিচয়েই অবাক হয়েছিলাম, এত মিলে যায় দুজনে! আমার সেই বিস্ময়কে সে চাইতো ভালবাসায় রূপান্তরিত করতে। আমার চোখে সে বন্ধুই ছিল, কিংবা হয়তো বন্ধুর চেয়ে একটুখানি বেশিই!
কথোপকথনে কত গভীরতা, কত অভিমান; কখনো আবার মতের অমিল - তীব্র ভ্রুকুটি! আমার উপর তার অধিকার নেই; নেই তার উপর আমারও। কি অদ্ভুত সম্পর্ক তাইনা! বন্ধুত্বের দেয়াল ভেঙে সে হয়তো পাশে চেয়েছিল, বলতে পারেনি। আমারও মাঝে মাঝে তাকে অধিকার দিতে খুব ইচ্ছে হয়নি, তা নয়। কিন্তু ঐ যে আমি ছন্নছাড়া, লক্ষ্মীছাড়া যে। তাই ভয় হত। হারাবার ভয়েই তাকে বলিনি-'তোমাকে পাশে চাই'। নিজেকে শাসন করেছি, তারপরেও একটা সময় অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম সে আমার অংশ হয়ে গেছে!
সীমা ছাড়িয়ে সে আদর করে ' মৃ ' ডাকলে, সে সম্বোধন আমার ভালই লাগতো! খুব অল্প সময়ের দূরে থাকাও অসহ্য বোধ হত! আমার অসহ্য আবেগ তাকে বুঝতে না দেয়ার কত চেষ্টা! তবু কেন যেন অনুভূতি বুঝতে পারতো সে। আর তাই তখন সে জাল গুটিয়ে আনার মত গুটাতে শুরু করলো আমার আবেগী মনকে। দীর্ঘ বিরহে আমাকে রেখে তার দূর নির্বাসনে চলে যাওয়া। দূরে বসে তার সেই মুচকি হাসি আমি দেখিনি; উপলব্ধি করেছি। তার ভাবনা ছিল দূরত্বে প্রেম বাড়ে! আর এখানেই ভুল করলো সে।
মৃন্ময়ী নাম বলেই কিনা কে জানে আমাকে সে মাটির পুতুল ভেবে নিয়েছিল। মাটির পুতুলে নকশা কেটে তারপর আগুনে পুড়াতে হয়। তাতে নকশা দীর্ঘস্থায়ী হয়। কিন্তু আমি মাটির পুতুল না, মোমের পুতুল। তাই তার সেই আগুনে আমি নিঃশেষ হয়ে গিয়েছিলাম।
তারপর ফিরেছিল সে, ফিরেছিল আমি যখন হেমলক পান করেছি- নিঃশেষ হয়ে গেছি তখন। ছন্নছাড়া আমি আজকাল বেশ উপভোগ করি। কি, দূরে গিয়ে খুব মজা দেখাতে চেয়েছিলে আমাকে, না?দেখ, কাছে থেকেও কত দূরে এখন আমি! সমুদ্র, কেমন লাগছে এখন এই বিরহ!
***** সমুদ্র কি কখনো কাঁদে নাকি? কিন্তু সে যুবক আকুল হয়ে কাঁদছিল। স্বল্প পরিচিত কিন্তু অনেক আপন; হৃদয়ের সবটা জুড়ে যে ছিল- সেই মেয়েটার পাশে বসে সে কাঁদছিল। জলের প্রতিটি ফোঁটা মেয়েটাকে স্পর্শ করলেই মেয়েটা হাসছিল; গভীর কোমা'য় শুয়ে শুয়ে খুব হাসছিল মৃন্ময়ী!
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
জালাল উদ্দিন মুহম্মদ
আমি মাটির পুতুল না, মোমের পুতুল। তাই তার সেই আগুনে আমি নিঃশেষ হয়ে গিয়েছিলাম। ------// অনেক আবেগ মথিত ভালবাসার নির্যাস এ গল্পকথন। প্রকাশভঙ্গিতে কাব্যিকতার ছোঁয়া স্পষ্ট। মনের গভীরে রেখাপাত করবে যে করো। অশেষ ধন্যবাদ ও শুভকামনা এর লেখকের জন্য।
রোদের ছায়া
আমার প্রানের 'পরে চলে গেল সে , বসন্তের বাতাস টুকুর মত ......সত্যি এই চলে যাওয়া এবং চলে গিয়ে কাছে থাকা অনুভুতি খুবই তীব্র ......গল্পটুকু ভালো লাগলো /
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি
খুব ভালো গল্প.....তবে এটিকে ছোট গল্প বলতে চাইনা ..... কি বলব ভাবতে হবে...তাই কিছুটা সময় চাই....ফাতেমা প্রমি .....পছন্দে রাখলাম আর মন খুলে দিলাম..৫....অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে.....
মোহন চৌধুরী
কি অদ্ভুত সম্পর্ক তাইনা! বন্ধুত্বের দেয়াল ভেঙে সে হয়তো পাশে চেয়েছিল, বলতে পারেনি। আমারও মাঝে মাঝে তাকে অধিকার দিতে খুব ইচ্ছে হয়নি.......ভালো লাগলো ..ধন্যবাদ
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“জানুয়ারী ২০২৫” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ জানুয়ারী, ২০২৫ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।